এডিস মশা নির্মূলে দুই সিটির পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট

এডিস মশা নির্মূলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নেওয়া পদক্ষেপে সন্তুষ্টু নয় হাইকোর্ট। আদালত বলেন, মশা নিধনে যদি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হত তাহলে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কেন? আমরা গত এক সপ্তাহে মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না।

সিটি করপোরেশনে যারা আছেন তাদেরকে আগে সচেতন হতে হবে। এরপর জনগণকে সচেতন হতে বলতে হবে। সেটা না করে প্রতিবেদনে ‘বোগাস’ কথাবার্তা তুলে ধরা হয়েছে। আমরা চাই সমন্বিতভাবে মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিক সিটি করপোরেশন। যাতে কোন মানুষকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে না হয়।

বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এই মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরকে তলব করেছে করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাদেরকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রকে নির্দেশ দিয়েছিলো হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ একই ধরনের অন্যান্য রোগের বিস্তার রোধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতেও বিবাদীদেরকে বলা হয়।

গত ১৪ জুলাই হাইকোর্টের দেয়া এই আদেশ অনুসারে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়রা ফাইরোজ।

ওই আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, জনগণ ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে এপ্রিল মাস থেকে। তখন থেকে মশা নিধনে কেন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। মেয়র বসে থাকবেন, কখন উচ্চ আদালত থেকে আদেশ আসবে তখন কাজ শুরু করবেন! পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে মশা নিধনে হাইকোর্ট রুল জারি করে না। কিন্তু সেবা সংস্থার নিষ্ক্রিয়তার কারণে আমাদেরকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে।

আদালত বলেন, যেদিন থেকে লোকজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হবে না সেদিনই মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের নেয়া কার্যক্রম আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে। যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তাতে মশা নির্মূল হলে মানুষ তো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হত না। যদি এটা মহামারী আকারে রূপ নেয় তখন কিছুই করার থাকবে না।

আদালত বলেন, পত্রিকায় দেখলাম ২৬ জন লোক মারা গেছে। যখন রুল জারি করা হয় তখন ছিলো ১১ জন। সাংবাদিকেরা কি মিথ্যা লেখে? শুনানি শেষে হাইকোর্ট প্রধান দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করে। খবর : ইত্তেফাক