নীতিমালা করে দেশের সকল আদালত খুলে দেওয়ার দাবি খন্দকার মাহবুবের

জানিয়েছেন আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন দাবি জানিয়ে বলেন, দেশের সকল আদালত খুলে দেওয়া হোক। তবে এক্ষেত্রে একটি নীতিমালা করার দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, অবিলম্বে সমস্ত আদালতগুলো খুলে দেওয়া হোক এবং নির্দিষ্ট নীতিমালা দেওয়া হোক। কয়টি মামলা, কোন কোর্ট শুনবে, কি ধরনের শোনা হবে ইত্যাদি। তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে আদালত বন্ধ থাকতে পারে না। এতে বিচারপ্রার্থী এবং আইনজীবীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

আজ সোমবার নিজ বাসায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ দাবি জানান ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ এই আইনজীবী নেতা।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের কোর্ট রুম অনেক বড়, বিরাট কোর্ট। সেখানে আমরা দুই তিনজন, চারজন করে আইনজীবী থাকলে, আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, তাহলে সরকার যে উদ্দেশ্যে কোর্ট বন্ধ রেখেছে সেই উদ্দেশ্য ব্যহত হবে না। তবে একটা জিনিস করতে হবে, হাইকোর্টে অনেক সংখ্যক বিচারপ্রার্থী আসে, তাদের সাথে অনেক লোক যাতে না আসে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এটা সীমিত করতে হবে।

তিনি বলেন, করোনার এই ব্যাধি কবে শেষ হবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই দীর্ঘ দিন ধরে আদালত বন্ধ থাকতে পারে না। এতে বিচারপ্রার্থী এবং আইনজীবীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনা করে মাননীয় প্রধান বিচারপতি অবিলম্বে কোর্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে আশা করি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে আদালত বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে তালমিলিয়ে সারাদেশে আদালতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল আদালত চালু করতে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার আলোকে আইন মন্ত্রণালয় গত ৯ মে ভার্চুয়াল উপস্থিতিকে স্বশরীরে উপস্থিতি হিসেবে গণ্য করে আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০ নামে গেজেট প্রকাশ করে।

এই অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আদালতকে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়। এর পরদিন ১০ মে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশে ভার্চুয়াল আদালত চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফুলকোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওইদিনই ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ এবং অধস্তন আদালতের জন্য আলাদা আলাদা ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ এবং আইনজীবীদের জন্য ‘ভার্চুয়াল কোর্টরুম ম্যানুয়াল’ প্রকাশ করা হয়।

এসব নিয়ম মেনেই সারাদেশে আদালত পরিচালিত হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১১ মে থেকে ভার্চুয়াল আদালত কার্যক্রম শুরু হয়। ২৮ মে পর্যন্ত নিু আদালতে শুধুমাত্র জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে। পরবর্তীতে ৩০ মে’র পর আদালতের সংখ্যা ও এখতিয়ার বাড়ানো হয়েছে। দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলায় শুনানির ক্ষমতা দিয়ে আদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব আদালতে শুনানি গ্রহণ করা হচ্ছে।