‘বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়’

বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয় মর্মে আইন মন্ত্রণালয়ের নেওয়া এমন সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিটে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল থাকার ফলে নারীদের দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। গত ২০২০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

রোববার (১০ জানুয়ারি) এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির।

তিনি জানান, ২০১৪ সালে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়িয়ার পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে আয়েশা সিদ্দিকাসহ তিনজন নারীর নামের একটি তালিকা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ওই প্রস্তাব বাতিল করে দেয়।

একই সালে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন ওই তালিকার এক নম্বরে থাকা আয়েশা সিদ্দিকা। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এ অবস্থায় ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে তা খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির জানান, রায়ে বলা হয়, বর্তমানে একটি ট্রেন্ড হলো স্থানীয় মসজিদে নিকাহ সম্পন্ন করা। মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে একজন নারী মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন না। এমনকী ওই সময়ে বাধ্যতামূলক দৈনন্দিন প্রার্থনা থেকেও তাদের রেহাই দেওয়া হয়েছে। এই শারীরিক ডিসকোয়ালিফিকেশন (নির্দিষ্ট সময়) তাকে ধর্মীয় কাজের অনুমতি দেয় না। মুসলিমদের বিয়ে একটি ধর্মীয় আচার।

রায়ে আরও বলা হয়, এখানে বিতর্ক নেই যে, আমাদের সংবিধান নারী ও পুরুষের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, অন্য পাবলিক অফিসে নারীরা যে ধরনের কাজ করেন, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেবে কার্যক্রমটা সম্পূর্ণ আলাদা।

এসব পর্যবেক্ষণ দিয়ে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ১৬ জুনের আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ না করে রুল খারিজ করে দেন বলে জানান হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, এ রায়ের ফলে নারীদের নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়।