পরীমনির দায়ের করা মামলায় নাসির-অমিরের জামিন

রাজধানীর সাভার থানায় দেশের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির দায়ের করা ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়েছেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী (অমি)।

আজ মঙ্গলবার (২৯ জুন) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাদী তাহমীদা তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

গত ২৩ জুন ঢাকার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) কামাল হোসেন আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

অপরদিকে, আসামিপক্ষে ইমরুল কাউসারসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। আগামী ৮ জুলাই এ মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে।

গত ১৪ জুন দুপুরে রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। এরপর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় গত ১৫ জুন নাসির-অমিকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছিলেন ঢাকার সিএমএম আদাদালতের বিচারক নিভানা খায়ের জেসি।

এর আগে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত ১৪ জুন বেলা ১২টার দিকে সাভার থানায় নাসির উদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমনি। এতে নাসির উদ্দিন ও তার বন্ধু অমির নামোল্লেখ করে আরও চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

বাদীর এজাহারে বলা হয়, গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, অমি ও বনিসহ দু’টি গাড়িতে উত্তরার দিকে যান।

‘পথিমধ্যে অমি বলে বেড়িবাঁধে ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডে তার দুই মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামতো আমরা ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে গাড়ি দাঁড় করাই। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেন। তখন অমি ভেতরে যায় এবং অমি অনুরোধ করে এখানের পরিবেশ অনেক সুন্দর, তোমরা নামলে নামতে পারো। এরই মধ্যে আমার ছোট বোন বনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলে আমরা ঢাকা বোট ক্লাবে প্রবেশ করে বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করি। টয়লেট থেকে বের হতেই ১নম্বর আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদের ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ ১নম্বর আসামি মদ্যপান করার জন্য জোর করেন। আমি মদ্যপান করতে না চাইলে ১নম্বর আসামি জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আমার সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই। এসময় ১নম্বর আসামি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন ও আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এছাড়া ১ নম্বর আসামি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারেন।

তখন আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ১নম্বর আসামিকে বাধা দিতে চাইলে তাকেও মারধর করে নীলাফোলা জখম করে। আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিতে গেলে আমার ব্যবহৃত ফোনটি ফেলে দেন তারা।