একুশে বইমেলায় আগতদের জন্য প্রস্তুত সিআরআই স্টল

একুশে বইমেলায় পাঠকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) স্টল। বরাবরের মত এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকছে সিআরআই স্টলে সেখানে নতুন চমক হিসেবে এবার রয়েছে বঙ্গবন্ধুর লেখা অপর এক বই অবলম্বনে প্রকাশিত নতুন গ্রাফিক নভেল \’আমার দেখা নয়া চীন\’। এ ছাড়াও সিআরআই প্রকাশিত গ্রাফিক নভেল \’মুজিব\’ সহ আরও অন্যান্য বই থাকছে এই স্টলে।

আজ বৃহস্পতিবার স্টলের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য উপস্থিত ছিলেন সিআরআই ট্রাস্টি নসরুল হামিদ। গ্রাফিক নভেল মোড়ক উন্মোচনের পূর্বে স্টলের সব বই সাজিয়ে রাখা থেকে শুরু করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন তিনি নিজেই। এরপর নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্টলের কিছু ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, \”একুশে বইমেলায় আগতদের জন্য প্রস্তুত CRI (স্টল নং ৮৭৮-৮৭৯, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ)। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুক্ষণ পর মোড়ক উন্মোচন করবেন গ্রাফিক নভেল \’আমার দেখা নয়া চীন\’-এর।\”

এবার সিআরআই এর স্টলের মূল আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে নতুন প্রকাশিত গ্রাফিক নভেল \’আমার দেখা নয়া চীন\’। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রাফিক নভেল \’মুজিব\’ ছিলো আমাদের এই ঘরনার প্রথম কাজ। মূলত গ্রাফিক নভেল প্রেমীদের জন্য এবং বঙ্গবন্ধুকে শিশু-কিশোরদের বোঝার মতো করে উপস্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে গ্রাফিক নভেল মুজিব প্রকাশ করা হয়। কিন্তু প্রকাশের পর দারুণ সাড়া মেলে গ্রাফিক নভেল মুজিব নিয়ে। ১০ খণ্ডে এই গ্রাফিক নভেল প্রকাশের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা অপর এক জনপ্রিয় বইকেও পাঠকদের জন্য গ্রাফিক নভেল আকারে উপস্থাপনের পরিকল্পনা করি আমরা।

জানা যায়, \’আমার দেখা নয়া চীন\’ গ্রাফিক নভেলটি বইমেলার উদ্বোধনের দিন মোড়ক উন্মোচন করা হবে। পহেলা ফেব্রুয়ারি বই মেলার উদ্বোধনের পর এই গ্রাফিক নভেলের মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই গ্রাফিক নভেলের প্রকাশক হিসেবে রয়েছেন সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। গ্রাফিক নভেল চিত্রায়ন করেছেন সব্যসাচী মিস্ত্রী। এর কাহিনী বিন্যাস ও সংলাপে কাজ করেছেন সিদ্দিক আহমেদ এবং প্রজেক্ট কিউরেশন ও সম্পাদনায় ছিলেন শিবু কুমার শীল।

বইয়ের প্রচ্ছদে \’শেখ মুজিবুর রহমান: আমার দেখা নয়া চীন\’ শিরোনামে যুবক বঙ্গবন্ধুকে দেখা যায় কোর্ট টাই পরা অবস্থায় তার চির পরিচিত চশমা চোখে। আর তার পেছনে চীনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ছবি। এই বইয়ে থাকছে ১৯৫২ সালে শান্তি সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফর করা তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা যা নিজের নোট খাতায় টুকে নিলেও তখনই পুরোপুরি লিখে উঠতে পারেননি তিনি। এ বিষয়ে লেখার অবসর মেলে ১৯৫৪ সালে, কারাগারে বসে। প্রায় ৬৫ বছর পর ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় বাংলা একাডেমি থেকে বই আকারে প্রকাশিত হয় এ ভ্রমণকাহিনী।

এই গ্রাফিক নভেলের বর্ণনায় বলা হয়, দীর্ঘ ২৫ দিনের চীন ভ্রমণকে শেখ মুজিবুর রহমান কেবল একটি ভ্রমণ হিসেবে নেননি, নিয়েছিলেন রাজনৈতিক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে। সদ্য বিপ্লবের পর চীনদেশের রাজনীতি, শাসনব্যবস্থা ও মানুষের জীবনযাত্রার কি পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তা বুঝতে ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্তকে তিনি নিষ্ঠার সাথে কাজে লাগিয়েছেন। গ্রাম, শহর, কৃষিখামার, হাসপাতাল, কলকারখানা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শ্রমজীবী মানুষের বাসস্থান তিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। বিপ্লবের মাত্র তিন বছরের মাথায় চীনের যে অকল্পনীয় পরিবর্তন হয়েছিল তা তরুণ শেখ মুজিবকে অভিভূত করেছে। তাঁকে মুগ্ধ করেছে নয়াচীন সরকারের অকপটতা, সত্যবাদিতা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। পিকিৎ, নানকিং, সাংহাই, ক্যান্টন, হ্যাংচোসহ চীনের বড় বড় শহর তিনি ট্রেনযোগে সফর করেছেন। সাক্ষাৎ পেয়েছেন মহান নেতা মাও সে তুংয়ের। মাওয়ের প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা তরুণ শেখ মুজিবকে অনুপ্রাণিত করেছে।

ভোরের সূর্য দেখে যেমন সারাদিনের উত্তাপ অনুমান করা যায়, ঠিক তেমনি এই গ্রন্থের প্রতিটি পৃষ্ঠায় ছড়িয়ে থাকা রাজনৈতিক অন্তর্দৃষ্টিও আভাস দেয় যে একদিন এই তরুণের হাতেই বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভার অর্পিত হবে। এই শেখ মুজিবুর রহমানই একদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে উঠবেন। বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবে। বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রস্তুতিকালকে বুঝতে এ গ্রন্থ সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।

Scroll to Top