চাঞ্চল্যকর মেজর (অবঃ) সিনহা, মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ লকডাউনের কারণে নির্ধারিত সময়ে হচ্ছেনা। লকডাউনের সারাদেশের মতো কক্সবাজার জেলায়ও কার্যক্রম না চলায় নির্ধারিত ধার্য্য দিনে সাক্ষ্য গ্রহণ করা যাচ্ছেনা। সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার যথাক্রমে ২৬, ২৭ ২৮ জুলাই একটানা ৩ দিন মামলাটির চার্জসীটভুক্ত প্রথম ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের দিন ধার্য্য ছিলো। গত ২৭ জুন কক্সবাজারের জেলা ও দায়েরা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মামলাটির চার্জ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহনের দিন ধার্য্য করে সাক্ষ গ্রহণের আদেশ দিয়েছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম। তিনি আরো জানান, এ মামলায় ৮৩ জন চার্জসীট ভুক্ত সাক্ষী রয়েছে। আদালতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চললে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ সহ অন্যান্য আইনী কার্যক্রমও স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
ফৌজদারী দন্ডবিধির ৩০২/২০১/১০৯/ ১১৪/১২০-খ/ ৩৪ ধারায় গত ২৭ জুন সকল আসামীর উপস্থিতিতে মামলাটির চার্জ গঠন করা হয়। তার আগে গত ১০ জুন মামলার ২নং আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে নিয়ে আসা হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন (অবঃ) মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান। হত্যার পাঁচদিনের মাথায় ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর এসটি-৪৯৩/২০২১ ইংরেজী। যার জিআর মামলা নম্বর : ৭০৩/২০২০ ইংরেজি। যার টেকনাফ মডেল থানা মামলা নম্বর : ৯/২০২০ ইংরেজি।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। (বরখাস্ত ওসি) প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয় দুই নম্বর আসামি। মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে। আদালত থেকে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় র্যাব-১৫ কে।
এরপর আসামি ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ৩ জন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্য এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ আরো মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গত ২৪ জুন মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী কনস্টেবল সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে আলোচিত এই মামলার ১৫ আসামির সবাই আইনের আওতায় আসে।
হত্যাকান্ডের এ ঘটনায় চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্ত শেষে গত ১৩ ডিসেম্বর ৮৩ জন সাক্ষীসহ আলোচিত মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করেন র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। ১৫ জনকে আসামি করে দায়ের করা অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকান্ডকে একটি ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কারাগারে থাকা মামলার ১৫ আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, প্রদ্বীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ।
